Breaking News
Home / Life Style / কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা সকলেই জানি কাঁঠালকে ফলের রাজা বলা হয় এবং বাংলাদেশের জাতীয় ফল হচ্ছে কাঁঠাল। কিন্তু আমরা কি জানি কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নাম কি? কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নাম হল ( Artocarpus heterophyllus) আর আমরা সকলেই জানি ইংরেজি নাম হচ্ছে (Jackfruit) পুষ্টিগুণ ঔষধি গুণ এবং বিভিন্ন রকমের উপকারী সমৃদ্ধ এই ফল। 

কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা অনেকে কাঁঠালের গুনাগুন সম্পর্কে অবগত নয়। অনেকেই আছেন কাঁঠাল অপছন্দ করে থাকেন তবে যদি কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আজ থেকে আপনি কাঁঠাল পছন্দের তালিকায় নিয়ে আসবেন। তবে এর কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। 

কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা 

কাঁঠাল কে জাতীয় ফল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পেছনে অবশ্যই কোন না কোন কারণ রয়েছে। সে সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই ভালোভাবে জানা উচিত। তাই আজকে আমরা  কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিবো। 

খনিজ উপাদান ভরপুর একটি ফল হচ্ছে কাঁঠাল। ৩০৩মিলি গ্রাম পটাশিয়াম থাকে ১০০ গ্রাম কাঁঠালে। হাই প্রেসারের রোগীদের জন্য কাঁঠাল অত্যন্ত উপযোগী এবং ভালো একটি ফল যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কাঁঠালকে পটাশিয়ামের একটি আদর্শ উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

কাঠাল এতো পুষ্টির যোগানো দাতা হলেও এতে ক্ষতিকারক ফ্যাট নেই, যার কারনে ওজন শরীরের ওজন বাড়ার ভয় নেই। যারা হাইপারটেনশনের রোগী তাদের জন্য কাঁঠাল একটি আদর্শ খাবার কারণটা কাঁঠাল টেনশন কমাতে সাহায্য করে এবং বদহজম থেকেও মুক্তি দেয়। 

আপনারা কি জানেন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও কাঁঠাল মুক্তি দিতে পারে কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। কাঁঠালের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম যা হাড় গঠনে অনেক সহায়তা করে এবং হারকে প্রচুর মজবুত করে তোলে। রক্তস্বল্পতা কমাতে কাঁঠাল অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। 

ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর ভরপুর কাঁঠাল। কাঁঠালের রয়েছে এমন গুনাগুন যা শিশুদের ভিটামিন এর অভাব পূরণ করে এবং ক্ষুধা নিবারন করে।  ৬ মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ানো উচিত। কাঁঠালে রয়েছে এমন গুনাগুন ক্ষমতা যা দুধ দানকারী মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। 

কাঁঠালে  ভিটামিন বি৬ এ ভরপুর যা হৃদরোগ থেকে মুক্ত রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠাল আলসার ক্যান্সার উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য কমায় কারণ এতে রয়েছে  ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস। 

কাঁঠালের উপকারিতা 

কাঁঠালের উপকারিতা

পৃথিবীতে সকল জিনিসের মধ্যে উপকারিতা এবং অপকারিতা থাকে। কাঁঠাল এর ব্যতিক্রম নয়। নিচে কাঁঠালের অপকারিতা গুলো তুলে ধরা হলো। গুরুপক ফল হিসেবে কাঁঠালকে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকায়। যে খাবারে আমিষের পরিমাণ বেশি সে খাবার হজম হতে দেরি হয় তাই কাঁঠাল হজম হতে দেরি হয় কারণ এতে আমিষের পরিমাণ বেশি। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হলেও কাঁঠাল অধিক পরিমাণে খেলে বদ হজম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

সতর্কতা

হিসেবে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের জন্য কাঁঠাল একটি সতর্কতামুলক বাণী হিসেবে ধরে নেওয়া উচিত। ডায়াবেটিসের রোগীরা কাঁঠাল অল্প পরিমান খাওয়া উচিত কারন তাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকে।

কাঁঠালের অপকারিতা

আমরা সকলেই জানি আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল। কাঁঠাল এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন।  কাঁঠাল খাওয়ার একটা নিয়ম রয়েছে। আপনি কাঁঠাল যখন  কাটবেন তখন অবশ্যই হাতে তেল মাখিয়ে নিবেন যাতে করে আপনার হাতে আঠা না লেগে যায় কারন আমরা সকলেই জানি কাঁঠালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঠা থাকে।

কাঁঠালের অপকারিতা

কাঁঠাল প্রচুর মিষ্টি ফল এবং এতে চিনির পরিমাণ বেশি তাই ডাইয়োবেটিক রোগীরা এর থেকে একটু দূরে থাকাই ভালো তবে খেলেও স্বল্প পরিমাণ খেতে পারেন। আমরা কম বেশী সকল ফলের জুস খেয়ে থাকি। আসলে জুসের মজাই অন্যরকম। আপনি চাইলে কাঁঠালের জুস করে খেতে পারেন। 

যাদের অধিক পরিমাণ গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁঠাল এড়িয়ে চলাই ভাল, কারণ কাঁঠাল খেলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাঁঠাল একটি অত্যন্ত সুস্বাদু ফল তবে একটি অধিক পরিমান খাওয়া থেকে বিরত থাকুন তাতে বদহজম হবে।যা আপনার শরীর যেন অবশ্যই ভালো নয়। 

কাঁঠালের কত ক্যালরি

বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের প্রধান ফল হিসেবে কাঁঠালকে বিবেচনা করা হয়। এমনকি তামিলনাড়ুর পবিত্র তিনটি ফলের মধ্যে একটি ফল হচ্ছে কাঁঠাল। আমরা সকলেই জানি ফলের মধ্যে বৃহদাকৃতির ফল হচ্ছে কাঁঠাল। বৃহদাকৃতির বলতে কতটুকু বৃহদাকৃতির এটা যদি আপনি বুঝতে চান তাহলে আপনি এককথায় ধরে নিতে পারেন একটি কাঁঠাল সর্বোচ্চ ৮০ পাউন্ড হতে পারে। 

কাঁঠালের কত ক্যালরি

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই জানি এটি পুষ্টি ভরপুর এবং সমৃদ্ধ পূর্ণ একটি ফল। প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি সমৃদ্ধ এবং আঁশযুক্ত ফল এর মধ্যে সেরা উৎস হিসেবে কাঁঠালকে বিবেচনা করা হয়। ৯৫ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় কাঁঠালের মাত্র ১০০ গ্রাম কোয়াতে।যা অকল্পনীয় অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে। আরও মজার বিষয় হচ্ছে এর মধ্যে রয়েছে হাজার ১৯ গ্রাম শর্করা আর ফাইবার বা আঁশ রয়েছে দেড় গ্রাম যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

আপনি কি জানেন আমাদের শরীরে ফাইবার বা আঁশ কেন এত বেশি জরুরী কারন ফাইবার বা আর আমাদের শরীর থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ কে দূর করে দেয়। তাছাড়াও কাঁঠাল রয়েছে ভিটামিন এ’ সি’ এবং বি কমপ্লেক্স যা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। 

কাঁঠাল এমন একটি ফল যার কোনো অংশই ফেলে দেওয়া হয়না। কাঁঠালের কোষ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে কাঁঠালের খোসা অতুলনীয়। কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়া যায় এবং ৯৮ক্যালোরি  পাওয়া যায় ১০০ গ্রাম বীজে। ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয় ও বছরে প্রায় ৪ লক্ষ ৩০০০০ কাঁঠাল জন্মায়। 

কাঁঠাল খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে

কাঁঠাল সুস্বাদু এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ,সি,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, এর মত শক্তিশালী পুষ্টি উপাদান। 

কাঁঠাল খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে

আসলে কাঁঠালে তেমন কোনো ক্ষতিকর দিক নেই। তবে কাঁঠাল খাওয়ার পর কিছু ফল/ খাবার  রয়েছে যা খেলে আপনার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে এবং তা আপনার স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।


চলুন জেনে নেই কাঁঠাল খাওয়ার পর কি কি ফল / খাবার  খেলে আপনার স্বাস্থ্যঝুঁকি দিকে যেতে পারে। 

ঢেঁড়স

ঢেঁড়স বা ভেন্ডি সাথে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত এটি একটি অত্যন্ত সুস্বাদু সবজি তবে কাঁঠাল খাওয়ার পর ঢেঁড়স বা ভেন্ডি খেলে পায়ে ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে সাথে বদহজম হতে পারে। 

পান

আমরা অনেকেই পান খেয়ে থাকি। অনেকের আবার অভ্যাস রয়েছে খাবারের পর পান খেতে হয়। তবে সাবধান কাঁঠাল খাবার পর যদি আপনি পান খান এতে আপনার মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাবে। 

দুধ

দুধ খাই না আমরা এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কাঁঠাল এবং দুধ একসাথে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ এতে করে পেট ফোলা, শরীরে ফুসকুড়ি এবং স্কিনে নানা রকমের সাদা ছোপ ছোপ দাগ এ রকম রোগ হতে পারে। 

পেঁপে

পেঁপে সুস্বাদু একটি ফল। কাঁঠাল খাওয়ার পর পেঁপে খেলে লুজ মোশন এবং ত্বকে অ্যালার্জি জনিত রোগের সম্মুখীন হতে হয় তাই, কাঁঠাল খাওয়ার পর পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 

পরিশেষে বলা যায় কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল শুধু নামে নয় অবশ্যই এর গুণ  রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *