অতিরিক্ত ওজন আমাদের কারো কাছে পছন্দ নয়। অনেকেই আছেন যারা ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় জানতে চান। আমরা আজকে ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা ইন্টারনেটে ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় লিখে সার্চ করে থাকেন, বিশেষ করে আজকের পোস্টটি তাদের জন্য। বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন কারণে ওজন কমানোর প্রয়োজন পড়ে। কেউবা চান চাকরির জন্য ওজন কমাতে। আবার কেউ চান নিজের শরীরকে স্লিম রাখতে। আবার অনেকেই চান নিজেকে যেন সুদর্শন দেখায়। তাই সকলের কথা মাথায় রেখে আজকে আপনাদেরকে খুবই সহজ উপায়ে জানিয়ে দিব কিভাবে মাত্র ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়। তাহলে চলুন জেনে নেই ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়।
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে প্রথম কাজ হচ্ছে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা। আপনার খাবার খাওয়ার সময় জেন প্রতিদিন একই সময় হয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। সকাল বেলা ভারী নাস্তা করতে হবে, দুপুরে ভাত , রাতে রুটি বা হালকা খাবার খাওয়ার নিয়ম। ভাতের কথা বলার কারণ হচ্ছে আমরা যেহেতু বাঙালি, আমাদেরকে একবেলা হলেও ভাত খেতে হয়। এর মাঝে যদি আপনার ক্ষুধা লাগে, তাহলে ভারী খাবার না খেয়ে বরং ফলমূল খেতে পারেন। এই খাদ্যাভ্যাস ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে কাজ করবে।
গরম পানি পান করা – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
নিয়মিত গরম পানি পান করুন। ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে লেবু-মধু-গরম পানির উপকারিতার কথা আমরা অনেকেই জেনে থাকবো। তবে শুধু গরম পানি পান করেও ওজন কমানো সম্ভব। গরম পানি আমাদের শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া গরম পানি আমাদের অস্বাস্থ্যকর ডায়েটের ফলে শরীরে যে বাড়তি মেদ জমে তা প্রতিরোধ করে। তাই গরম পানি ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায়।
লেবু পানি পান করা – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
ওজন কমাতে অনেকের কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় উপায় সকালে খালি পেটে লেবু পানি পান করা। ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে আমরা লেবু পানির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করছি। লেবু পানি দুটো উপাদান আলাদাভাবে শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু এই ২টা উপাদান একসঙ্গে কি আসলে ততটা উপকারী, যতটা মনে করা হয়? লেবুর রস মেশানোর পানি ছাদে এবং ঘ্রাণে শরবত হিসেবে চমৎকার। এটি পাকস্থলী ও অন্ত্রের অন্যান্য অংশ থেকে পাক রস তৈরিকে ত্বরান্বিত করে থাকে। পেট ফাঁপা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ভারী খাবার খাওয়ার পর কোমল পানির পরিবর্তে বেছে নিতে পারেন লেবু পানি।
আমরা অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চাওয়া বা কফি চাই। চা কফি শরীরের পানি শূন্যতা তৈরি করে। এক্ষেত্রে দিনের শুরু করতে পারেন লেবু পানি দিয়ে। ৪০০ মিলি লিটার কুসুম গরম পানিতে দুই চামচ লেবুর রস দিয়ে একটু মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটি আপনার হজম শক্তি বাড়াবে। এ কারণে সারা দিনে আপনি যা খান তা সহজেই হজম হয়ে যাবে। খালি পেটে লেবু পানি মধু পানে ক্ষুধা কম লাগে। সারাদিনে খাবার কম খাওয়া হয়। তাই শরীরে ক্যালরি ও কম প্রবেশ করে। এ কারণে ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে আমরা এই উপায়টি ব্যবহার করতে পারি।
লেবু পানি পান খাওয়ার নিয়ম
সকালে নাস্তা করার অন্তত ৩০ মিনিট আগে লেবু পানি পান করুন। ক্যাফিন আমাদের শরীরে পানি সুন্দর শূন্যতা তৈরি করে থাকে। চা/কফির পরিবর্তে ও লেবু পানি ভালো একটি পানীয়। এটি আমাদের পানি শূন্যতা দূর করে। তবে দিনে ২ বারের বেশি লেবু পানি পান করা যাবে না। অতিরিক্ত করে লেবু পানির সাথে কিছুটা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। তাহলে ক্ষুধা কম লাগে এবং সারা দিনে খাওয়া কম হয়। যার ফলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য এটি আমাদের অন্যতম একটি ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়।
রুটিন অনুযায়ী খাবার খেতে হবে – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
আমাদের অনেকেরই ধারণা রাতে খাবার না খেলে হয়তো আমাদের ওজন কমে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা। ওজন কমে ঠিকই কিন্তু শরীরের অনেক ক্যালরি নষ্ট হয়ে যায়। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাহলে একটি ভেবে দেখুন তো, আপনি ওজন কমাতে চেয়েছিলেন নাকি রোগা হতে চেয়েছিলেন? তাহলে আসুন খাবারের রুটিনটি দেখে নেওয়া যাক। ওজন কমাতে অবশ্যই দিনে তিন বেলা খাবার খান। শরীরের নিয়মিত হজম প্রক্রিয়ার কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন। তাই আপনার ডায়েট চার্ট অনুযায়ী সকাল, দুপুর এবং রাতে খাবার খান। এতে আপনার ডাইজেস্ট বা হজম প্রক্রিয়া যেমন ভালো থাকবে, ঠিক তেমনি ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে কাজ করবে। ভুলেও রাতের খাবার বাদ দিবেন না।
তবে তা অবশ্যই হালকা খাবার খাবেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা আগে আপনার রাতের খাবার শেষ করুন। ভারি খাবার রাতের বেলা একেবারেই খাওয়া যাবে না। খাবার খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটুন। যারা জিমে গিয়ে শরীর চর্চা করার সময় পান না । তারা এই কাজটি করতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের মোটাবলিজন বাড়তে সাহায্য করবে সেই সঙ্গে খাবারের ফলে বাড়তি মেধও শরীরে জমতে পারবে না। ফলে ওজন বাড়বে না।
গ্রিন টি – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ গ্রিন টি পান করলে প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ক্ষয় করা সম্ভব। গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এটি আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন গ্রিন টি অবশ্যই পান করুন।
কার্বোহাইড্রেড যুক্ত খাবার পরিহার – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
বেশি ক্যালরির কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবারের বদলে শস্য থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া হচ্ছে ওজন কমানোর অন্যতম উপায়। অর্থাৎ সাদা আটা থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। আশযুক্ত খাবার খেতে হবে। এটি আপনার ক্ষুধার মাত্রা কমাবে। কার্বো-ডায়েট করার সময় দেহ শক্তির জন্য শর্করার বদলে আপনার শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট ব্যবহার করবে।
লাল আটা থেকে উৎপাদিত খাবার আপনার শরীরে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ বাড়ায় । সেই সঙ্গে খাবার ধীরে ধীরে হজমে সহায়তা করে। ফলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে আর খোদা কম লাগলেই আপনি কম খাবেন এটাই স্বাভাবিক। শস্যদানা থেকে উৎপাদিত খাবার খেলে ফ্যাট যুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমবে।
পানি পান – ১ সপ্তাহে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
ওজন কমানোর জন্য অন্যতম ট্রিক হচ্ছে প্রতিদিন বেশি পানি পান করা। বেশি পরিমাণ পানি পান করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ হয়। প্রতিদিন চার গ্লাস বা দুই লিটার পানি পান করলে ৯৬ ক্যালোরি শক্তি অতিরিক্ত খরচ হয় পরিশ্রম ছাড়াই। এছাড়া খাবার আগে খালি পেটে পানি পান করলে তাতে পেট অধিকাংশ ভর্তি হবে এবং খোদা কমবে ও কম পরিমাণ খাবারে পেট ভরে যাবে, তাতে অটোমেটিকলি কম ক্যালোরি শরীরে ঢুকবে। ১২ সপ্তাহব্যাপী এক গবেষণায় দেখা গেছে খাবার এক থেকে দুই ঘন্টা আগে এক থেকে দুই লিটার পানি খেলে ৪৪ ভাগ ওজন কমে। তাই ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ও কম ক্যালোরি যুক্ত খাবারের পাশাপাশি বেশি পরিমাণে পানি পান করা কার্যকরী। যেসব পানীয় ক্যাফেইন যুক্ত, যেমন গ্রিন টি, কপি স্বাস্থ্যক ও জন কমাতে সহায়ক কারণ এ পানীয় গুলো শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করতে সাহায্য করে।
এতক্ষণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে সাত দিনে পাঁচ কেজি ওজন কমানো কোনভাবেই সম্ভব না। সুতরাং ওজন কমাতে চাইলে যে সকল নির্দেশনা বলি উপরে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো লক্ষ্য করলে বা মেনে চললে আপনার শরীর সুস্থ এবং ওজন স্বাভাবিক থাকবে।