Breaking News
Home / Education / শবে বরাত এর ফজিলত – Shab e Barat is an important night

শবে বরাত এর ফজিলত – Shab e Barat is an important night

সম্মানিত পাঠক ভাই ও বোন, আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো শবে বরাত রাতের সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে। শবে বরাতের রাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত (Shab e Barat is an important night)। মুসলমানদের জন্য শবে বরাতের রাত একটি ইবাদতের রাত। রাতে এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমাদের জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শবে বরাত সম্পর্কে অনেকে অনেক ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন। যেমনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাতের নামাজের নিয়ত, শবে বরাত নামাজের নিয়ত, শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস ও শবে বরাত এর ফজিলত ইত্যাদি। আজকের আলোচনাটি সাজানো হয়েছে শবে বরাতের এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নিয়ে যেগুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। তাহলে চলুন শুরু করা যাক শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস ও শবে বরাত এর ফজিলত দিয়ে।

শবে বরাত এর ফজিলত - Shab e Barat is an important night

শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস

ইসলামের দৃষ্টিতে বড় ফজিলতপূর্ণ একটি রাত হচ্ছে শবে বরাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত্রে ইবাদতের মাধ্যমে এই পবিত্র ফজিলত পূর্ণ শবে বরাত পালন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। মুসলমানদের জন্য শবে বরাত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস পাওয়া যায় যেখানে এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে। নিচে কয়েকটি শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস দেওয়া হল। 

১) হযরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, এমন পাঁচটি রাত রয়েছে, যে রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। রাতগুলো হচ্ছে, জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের 15 তারিখের রাত, ২ ঈদের রাত। ( সুনানে বায়হাকি, হাদিসঃ ৬০৮৭)

২) আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন যখন অর্ধ সাবানের রাত, অর্থাৎ শাবানের ১৫ তম রাত তোমাদের সামনে আসে তখন তোমরা তাতে কিয়াম তথা নামাজ পড়ো এবং পরবর্তী দিনে রোজা রাখো। মহান আল্লাহ তায়ালা এই রাতে সূর্যাস্তের পর প্রথম আসমানে অবতরণ করেন। এরপর তিনি এই বলে ডাকতে থাকেন, “ তোমাদের মধ্যে কোন ক্ষমা প্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। তোমাদের মধ্যে কোন রিজিক অন্বেষণকারী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব। তোমাদের মধ্যে কোন বিপদগ্রস্ত আছে কি? আমি  তার বিপদ দূর করে দেব।” ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে। ( ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৩৮৮) 

৩) আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, আমি এক রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাছে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, তিনি জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে আছেন। তিনি বললেন, “ হে আয়েশা, তোমার কি এ আশঙ্কা হয় যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার উপর জুলুম করতে পারেন?” আমি বললাম, “ হে আল্লাহর রাসূল, আমার ধারণা হলো আপনি অন্য কোন স্ত্রীর কাছে গিয়েছেন।” তিনি বললেন, “ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অর্ধ সাবানের রাতে দুনিয়ার আকাশে আসেন এবং কালব গোত্রের ছাগল ভেড়ার পশমের থেকেও অধিক সংখ্যক লোককে ক্ষমা করে দেন।” ( তিরমিজি, হাদিসঃ ৭৩৯) 

শবে বরাত এর ফজিলত

যে সকল মাসে মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের জন্য বিশেষ রহমতে ব্যবস্থা করেছেন তার মধ্যে অন্যতম একটি মাস হচ্ছে পবিত্র শাবান মাস। হুজুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পবিত্র শাবান মাসে সবথেকে বেশি নফল রোজা রাখতেন। 

উম্মত জননী হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে পূর্ণ রোজা রাখতে দেখিনি ও শাবান মাসের থেকে অন্য কোন মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনি। 

– সহীহ বুখারী ও মুসলিম।

অন্য আরেকটা হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত ওসামা ইবনে জায়েদ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা হতে বর্ণিত, আমি একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আরজ করিলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আপনাকে সাবান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে এত বেশি পরিমাণে রোজা রাখতে দেখিনি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এটা ওই মাস যে মাস সম্পর্কে অধিকাংশ লোকই গাফেল থাকে। এটা রজব ও রমজান মাসের মধ্যবর্তী মাস। এটা এমন মাস যে মাসে মানুষের আমলসমূহ আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করা হয়ে থাকে। আমার আকাঙ্ক্ষা যে, আমার আমল আল্লাহতালা দরবারে এই অবস্থায় পেশ করা হোক যে রোজাদার। – নাসায়ি ও শোয়াবুল ঈমান

পবিত্র শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন সহি হাদিসের কিতাবে অসংখ্য বর্ণনা পাওয়া যায়। যার দ্বারা পবিত্র এই শাবান মাসের ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং পবিত্র সাবান মাসে রোজা রাখা প্রমাণিত একটি বিষয়। 

এবার আসা যাক শবে বরাত প্রসঙ্গে। শবে বরাত ফারসি শব্দ। শব শব্দের অর্থ রাত আর বরাত অর্থ নাজাত, মুক্তি রক্ষা ইত্যাদি। মুমিন মাত্রই এই বিশেষ রাতের নামের সঙ্গে পরিচিত রয়েছে। তবে হাদিস শরীফে এই রাতকে অভিহিত করা হয়েছে ‘ লাইলাতুল নিসফি মিন শাবান’ তথা শাবানের পনেরতম রজনী’। মুফাসসিরে কেরামগণ শবে বরাত রাতের আরো কয়েকটি নামের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন লাইলাতুল মোবারক, লাইলাতুল বারাআ, লাইলাতুল সাক ইত্যাদি। – তাফসীরে কুরতুবী।

এ রাতে যেহেতু গোনাহগারের গোনাহ সমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং অসংখ্য অপরাধীর অপরাধকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। সেহেতু এই রাত মুসলমানদের মাঝে শবে বরাত নামে প্রসিদ্ধ রয়েছে। 

পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে কোরআন শরীফে সরাসরি কোন ধরনের নির্দেশনা না থাকলেও হাদিস শরীফে এ সম্পর্কে সুস্পর্শভাবে গুরুত্ব তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত রয়েছে। এ সকল বর্ণনা থেকে কিছু বর্ণনা সম্পর্কে পৃথিবীর প্রায় সব মুহাদ্দিসগণ সহিহ বর্ণনা গুলোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্য থেকে কিছু বর্ণনা হাসান ও কিছু বর্ণনা দুর্বল বলেছেন। এই কথাটি সত্যি যে কোন বিষয়কে প্রমাণ করার জন্য একটি সহিহ হাদিসই যথেষ্ট। 

আর এই বিষয়ে মহাদ্দিস, ইসলামী স্কলার ও আলেমদের অধিকাংশ একমত, ফজিলতের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদিসের উপর আমল করা জায়েজ এবং জরিপ অর্থাৎ দুর্বল সনদের হাদিস দ্বারাও কোন আমল মুস্তাহাব হওয়া প্রমাণিত হয়। তাছাড়া হাদিসে শবে বরাত বা ফজিলতের বিপক্ষে কোন বর্ণনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

পরিশেষে

মুসলমানদের জন্য শবে বরাত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত (Shab e Barat is an important night)। পবিত্র শবে বরাত অন্যতম একটি আমলের রাত। হাদীস শরীফে শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস রয়েছে অনেক। শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে বিভিন্ন ধরনের ফজিলত সম্পর্কে জানা যায়। আমাদের আজকের বিষয়টি ছিল শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে। শবে বরাত এর ফজিলত ও শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে (Shab e Barat is an important night)। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অপরের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং এ ধরনের আরো ধর্মীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *