Breaking News
Home / Education / স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়

স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়

অন্যান্য দিনের মতো আজ আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি। আমাদের আজকের বিষয় স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়  সম্পর্কে।  অনেকে স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়  না জানার কারণে নিজের শরীরের সাথে মানানসই হতে পারছে না অর্থাৎ নিজের শরীরের যত্ন নিতে পারছে না। এজন্য অনেকেই স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়  সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আপনিও যদি স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে  পোস্টটি সম্পুর্ণ পড়তে থাকুন।

স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়

সকল সুখের মূল স্বাস্থ্য। সুখী হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে আপনাকে সুস্থ থাকতে হবে। নিজের স্বাস্থ্যের সঠিক খেয়াল রাখা স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় গুলোর উদ্দেশ্য। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে আপনি কোন কিছুতেই সুখী হতে পারবেন না। আপনার স্বাস্থ্য সঠিক পর্যায় আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য হলেও স্বাস্থ্যের যথাযথ যত্ন নেওয়ার কয়েকটি উপায় আমাদের পোষ্ট থেকে পড়ে নিতে পারেন। যেগুলো আপনাদের স্বাভাবিকভাবে  সহযোগিতা করবে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় সমূহ।

শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার ৮ টি গুরুত্বপূর্ণ উপায়

১) সঠিক খাবার খাওয়া

 স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে সঠিক খাবার খাওয়া। সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদেরকে 40 ধরনের নিউট্রিয়েন্টসের প্রয়োজন পড়ে। যেটা কোন একক খাবার দিতে পারো না। এজন্য আমাদেরকে সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা প্রয়োজন। পুষ্টিকর খাদ্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টিকর খাবার রয়েছে কম ফ্যাট, উচ্চ ফাইবার এবং উদ্ভিদ খাদ্য।  এছাড়াও স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার (যেমনঃ মুরগি এবং মাছ) খেতে পারেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়  হিসেবে সারাদিনে কমপক্ষে ছয় থেকে আটটি ফল এবং শাকসবজি খেতে হবে। 

স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে আপনি সঠিক খাবার খাচ্ছেন কি না সেটা আপনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সঠিক খাবার সম্পর্কে জানতে নিচের তালিকা অনুসরন করতে পারেন। 

  • দিনে কমপক্ষে ৫টি ফল এবং শাকসবজি খেতে হবে।
  • উচ্চমাত্রার আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। (যেমন- আলু, রুটি, চাল ও পাস্তা)
  • দুধ কিংবা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা।
  • শিম, মাছ, ডাল, ডিম ও মাংস সহ অন্যান্য প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া। 
  • অসম্পৃক্ত তেল এবং অল্প পরিমাণে স্যান্ডউইচ খাওয়া।
  • প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ গ্লাস পরিমাণ পানি পান করা।

আমাদের পাকস্থলীতে মাইক্রোবায়োম নামক একটি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এই ব্যাকটেরিয়াটি মানুষের সুস্বাস্থ্যের উপর গভিরভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এজন্য যত বেশি সম্ভব উদ্ভিজ খাবার খেতে হবে।

২) ফল-ফলাদি ও সবজি

স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে শাক-সবজি, ফলমূল জাতীয় খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এধরণের খাবারে প্রায় সকল ধরণের ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে। শরীর সুস্থ রাখার জন্য বা স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় আপনি যত ধরণের ওষুধ খান বা শরীর চর্চা করেন না কেন, শরীরের ভিটামিন এবং পুষ্টির অভাব মিটানোর জন্য আপনাকে শাকসবজি এবং ফলমূল খাবার খেতেই হবে। বিশ্বের প্রায় সকল স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তাররা স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে এই ধরণের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। প্রাকৃতিক এই ধরণের খাবার নিয়মিত খাওয়ার কারণে, মানুষের দেহের ভিটামিন, স্নেহ, শর্করা জাতীয় খাদ্যের ভারসাম্য যেমনি ঠিকথাকে। তেমনি করে এতে সকল ধরণের অসুখ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। এজন্য আপনাকে স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও শাকসবজি জাতীয় প্রাকৃতিক খাবার গ্রহন করতে হবে। 

৩) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

পানির অপর নাম জীবন। একজন মানুষের দেহের প্রায় ৬০-৭০ ভাগ রয়েছে পানি। শুধু তৃষ্ণা মিটানোর জন্য পানি পান করা হয় বিষয়টি মটেও এমন নয়। পানি পান করার আরও অনেক ধরণের উপকারিতা আছে। পানি বদহজম, ডিহাইড্রেশন, মাথা ব্যাথা থেকে শুধু করে বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে রক্ষা করে থাকে। এছাড়াও পানির আরও বেশকিছু বিশেষ গুণাবলী রয়েছে। যথাঃ-

  • গরমে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
  • শরীর থেকে বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • হারের জোর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
  • ত্বক ভালো রাখার কাজে সাহায্য করে।

নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার কারণে অনেক ধরণের রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে পানির বিকল্প কিছু নেই।

৪) পরিমাণ মতো ঘুম ও বিশ্রাম

স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমান এবং বিশ্রাম করতে হবে।  আজকে 5 ঘন্টা তো কালকে 7 ঘণ্টা ঘুম।  এভাবে অনিয়মিত ভাবে না ঘুমিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমান। একজন প্রাপ্ত বয়সের মানুষের রাতের ঘুম দৈনিক গড়ে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।  তবে যদি একটানা ঘুমের ঘাটটি চলতে থাকে তাহলে শরীরের উপর খুবই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এটি বিশেষ করে ছাত্র বয়সে বেশি প্রভাব ফেলে। যেমনঃ লেখাপড়ায় মনোযোগ ক্ষুণ্ণ হওয়া, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া, খাবারের রুচি চলে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম শারিরিক ও মানসিক স্বাস্থের সঙ্গে জড়িত। যেমনঃ কম ঘুমের কুফল শরীরের উচ্চতর ওজনের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে এবং ভালো ঘুমে কম ক্যালারি খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। ভালো ঘুম আপনার শরীরের ঘনত্ব এবং উৎপাদনশীলতা উন্নত করার পাশাপাশি আপনাকে কাজকর্ম কিংবা খেলাধুলা আরো বেশি পারফরম্যান্স পেতে সহযোগিতা করা। এছাড়াও ভালো ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ এবং মেজাজ উন্নত করতে সহযোগী হয়।

 নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে স্থূলতা, বিষন্নতা,  গ্লুকোজ বিপাক, হার্টের রোগ,  টাইপ-৩  ডায়াবেটিস বিভিন্ন দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  সুতরাং পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানোর কারণে আপনি দিন দিন খারাপ স্বাস্থ্যের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে আপনাকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

৫) নিয়মিত শরীরচর্চা করা

 নিয়মিত শরীরচর্চা করা স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়।  স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করার গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা ওজন হ্রাসের অবদান রাখে। এছাড়াও হৃদরোগ, স্ট্রোক,  টাইপ-২ ডায়াবেটিস ছাড়াও ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে ৫০% পর্যন্তও মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনে ৩০% পর্যন্ত।   এটা বিজ্ঞানীদের ধারণা। যদিও জন্ম-মৃত্যু ভাগ্যে লেখা আছে।

 প্রত্যেক সপ্তাহে 5 দিন  30 মিনিট করে শরীরচর্চা করলে সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা সম্ভব এবং ৮৫% স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহযোগিতা করে থাকে। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে অনেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকে। আপনি যত বেশি ব্যায়াম করবেন আপনার শরীরে ততবেশি প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে এর সুবিধা ভোগ করবেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম কোর।। সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

৬) পর্যাপ্ত আলো বাতাস গ্রহণ করা

 সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো-বাতাস গ্রহণ করতে হবে। সুস্বাস্থ্যের মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি বিষয়। সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি ছাড়াও আরো বেশ কিছু স্বাস্থ্য গুণ রয়েছে। যা কিনা মানুষের দুর্বল হাড় শক্ত করতে, রক্তচাপ কমিয়ে আনতে ও হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে অত্যন্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো-বাতাস গ্রহণ করার ফলে মানুষের মেজাজ  ভালো থাকে, মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে সে নিজেকে সুস্থ বোধ করে। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়গুলোর মধ্যে এটি ৬ নাম্বারে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় হিসেবে আপনাকে পর্যাপ্ত আলো বাতাস গ্রহণ করতে হবে। পর্যাপ্ত আলো বাতাস গ্রহণ করতে আপনি যা করতে পারেন;

আপনার ঘরটিকে এমনভাবেই স্থাপন করুন যাতে করে ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। প্রতিদিন ভোর বেলা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।  ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

৭)  স্বাস্থ্যসেবায়  বিনিয়োগ করুন

যখন আপনি অসুস্থ বোধ করে থাকেন তখন আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ভাবে চেকআপ করতে থাকুন এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। অসুস্থ হলে সোশ্যাল মিডিয়া (টুইটার, ফেসবুক) এর মাধ্যমে টেলিমেডিসিন প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতা থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন।

আজ আমরা আলোচনা করেছি স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় নিয়ে। আপনি যদি স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতে চান এবং নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঠিক উপায় জানতে পারবেন।  আশা করি আপনাদের জন্য খুবই উপকারী হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং উপরে দেওয়া প্রত্যেকটি বিষয় নিয়মিত রুটিন হিসেবে তৈরী করুন এবং করতে থাকুন।  ধন্যবাদ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *