মৌসুমী ফলের মধ্যে নিচে একটি অন্যতম ফল । লিচু পছন্দ করে না এমন খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে। লিচুর দেখতে যতটা সুন্দর খেতে ঠিক ততটাই অতুলনীয়। আমরা যারা অসুস্থ রয়েছি তারাও লিচু খেতে পারেন তাতে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি পাবেন এবং গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে। একজন গর্ভবতী মায়ের উচিত প্রত্যেক দিন দুইটা থেকে তিনটা লিচু খাওয়া। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই সব ধরনের ফল খাওয়া উচিত।
কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় মায়ের কিছু কিছু ফল থেকে বিরত থাকা উচিত কারণ তা সে গর্ভবতী মায়ের এবং বাচ্চার উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে থাকে। তাই ডাক্তারের পরামর্শমতো ফল খাওয়া উচিত। অবশ্যই মৌসুমী ফল গুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
গর্ভাবস্থায় মা কে সব সময় সাবধানে খাবার গ্রহণ করতে হয়। কারন মায়ের খাবার মানে শিশুর খাবার। ভুল করেও যদি অনিয়মিত কোন কিছু গ্রহন করে এতে শিশুর ক্ষতি হবার সম্ভবনা / ঝুঁকি থাকে।
গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। আমাদের জানা উচিত গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কেন-
আমরা সবাই জানি লিচুর স্বাদ (টক,মিষ্টি) দুটোই পাওয়া যায়। তবে মিষ্টি লিচুই সবার পছন্দের।
লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন।
গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া এর অনেক উপকারীতা রয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভাল দিক হল : পচনতন্ত্র, শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শরীর কে হাইড্রেড রাখে। যা এক জন স্বাভাবিক মানুষের জন্য অনেক দরকারী।
ত্বক ও পেটের জন্য লিচু খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন এতে রয়েছে, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, জিং, ম্যাগনেসিয়াম আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ,সি,ই,কে ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় তা গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে উচিত।
গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়ার উপকারিতা (Benefits of eating litchi during pregnancy) :
গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে এবং এর কিছু ভাল দিক রয়েছে আমরা আজকে এদিক গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
টিস্যু বৃদ্ধিতে উপকারী (Beneficial in tissue growth) :
আমরা সকলেই জানি মানব দেহ টিস্যু দ্বারা তৈরি এবং টিস্যু বৃদ্ধিতে এবং শক্তিশালী করতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রয়োজন। লিচুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যে আপনার টিস্যু বৃদ্ধিতে এবং শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। লিচুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করে। তাই বুঝাই যাচ্ছে লিচু কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় ফল গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়ার কতটা উপকারিতা।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ (Rich in antioxidants) :
লিচুর স্বাদ অতুলনীয় এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ যাতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ ফ্ল্যাভোনয়েড কোয়ারসেটিন। আপনারা জেনে অবাক হবেন লিচু হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাছাড়া হার্টকে শক্তিশালী করে তোলে এবং মা ও শিশুর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ উপকারী। লিচু ত্বকের জন্য অতুলনীয়, যা ত্বককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
হজমে সহায়ক (Aids in digestion) :
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর বমি বমি লাগে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ঝামেলা থাকে যদি খাদ্যতালিকায় লিচু রাখা হয় তবে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবে এবং মলত্যাগেও উন্নতি ঘটবে তা ছাড়া বমি বমি ভাব কিছুটা দূর হয়ে যাবে। গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে এবং এটি উপকারী ।
শক্তিশালী ইউমিন সিস্টেম (Strong Yumin system) :
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শরীরের নানা ধরনের কার্যকলাপ চলতে থাকে যা আপনার শরীরের বিভিন্ন দিক থেকে উন্নয়ন ঘটায় এবং বিভিন্ন দিক থেকে দুর্বল করে তোলে এমত অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের অবশ্যই ভিটামিনের প্রয়োজন পড়ে আর আমরা সবাই জানি ভিটামিন-সি শরীরের শক্তি সঞ্চয় করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে লিচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রয়োজনীয়।
ওজনে সঠিক ভারসাম্য রাখতে সহায়ক (Helps maintain proper weight balance) :
মানবদেহে ওজনের ভারসাম্য সঠিক রাখতে পলিফেনল এর প্রয়োজন হয়, আর তা লিচুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে যার ফলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা যদি লিচু খায় তবে তার ওজন সঠিকভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে তাই গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া কোন ঝুঁকি তো নয়ই বরং উপকার। তাছাড়া অনলি চুলের জন্য উপকারী।
সতর্কতা (warning) :
অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্য মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তাই কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক না যদিও লিচু উপকারিতা ফল তবে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
লিচু একটি সুস্বাদু রসালো ফল খেতে খুবই মিষ্টি তাই লিচু অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না কারণ এতে এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তাই অল্প পরিমাণ লিচু খান যতটুকু আপনার জন্য প্রয়োজন।
লিচুতে মৃত্যুঝুঁকি (Lychee is deadly) :
গর্ভবতী মা লিচু খেতে পারবে আবার আমরা বলছি লিচুতে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে দুই রকম কথা হয়ে গেল।
আসলে লিচুতে পুষ্টিগুণে ভরপুর যার ফলে শক্তি ও প্রচুর বৃদ্ধি করে শরীরে।
লিচু উচ্চ রক্তচাপ কমায় তবে অতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আপনাকে নিম্ন রক্তচাপের দিকে ঠেলে দিবে। যার ফলে আপনার বমি, মাথা ঘোরা, পেটব্যথা নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। খালি পেটে লিচু খাওয়া যাবে না কারণ এতে বিষিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত লিচু খাবেন না। এমনিতেও আপনি চাইলে লিচু সারাবছর খেতে পারবেন না এটি গ্রীষ্মকালীন ফল। আমরা সকলেই জানি মৌসুমী ফলগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে এবং মৌসুমি ফল গুলো খাওয়া উচিত তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। আমাদের উচিত যেটা যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই খাওয়া।