Breaking News
Home / Islamic / শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত – শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত – শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

আসসালামু আলাইকুম,  আজ আমরা আলোচনা করব শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত সম্পর্কে।  অনেকেই শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত সম্পর্কে জানেনা। রোজাদারদের কাছে শাওয়াল মাসের রোজা অতি পরিচিত। গ্রাম-গঞ্জের শাওয়াল মাসের রোজা ‘৬ রোজা’ হিসেবে বেশি পরিচিত।  আজ আমরা এই শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। আপনি যদি শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। 

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত - শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

রোজাদারদের কাছে শাওয়াল মাসের রোজা খুবই পরিচিত একটি আমল।  গ্রামগঞ্জে ঈদের পরবর্তী সময়ে শাওয়াল মাসের রোজা রাখাতে হয়। শাওয়ালের ৬ রোজার ফজিলত রয়েছে অনেক। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত?  আমরা অনেকেই রমজান মাসে রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের রোজা রাখি কিন্তু শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত সম্পর্কে জানি না। এমনকি অনেকে প্রশ্ন করেন শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস। আজকের পোস্টে শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত সম্পর্কে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত। 

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত

আমরা যারা শাওয়াল মাসের পর রোজা রাখবো কিন্তু শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত জানি না তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়তের উপর নির্ভর করে আমাদের যেকোনো আমল। নেক নিয়তে কোন আমল করলে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের আমলকে কবুল করবেন, ইনশাআল্লাহ। তেমনি রমজান মাসের পর শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখা সুন্নত। শাওয়ালের ৬ রোজার ফজিলত রয়েছে অনেক।  শাওয়াল মাসের রোজা রাখার পূর্বে অবশ্যই আমাদের শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত জানতে হবে। শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত জানলে আমরা শাওয়াল মাসের রোজা রাখতে পারবো। চলুন এবার দেখে নেই শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত। 

অনেকেই প্রশ্ন করেন শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত কিভাবে করব? নিয়ত মানে মুখে উচ্চারণ করা নয়। “আমি আজ শাওয়াল মাসের রোজা রাখবো”  এই কথাটি নিজের মতো করে মনে মনে সংকল্প করলেই বা ইচ্ছা করলেই নিয়ত হয়ে যাবে। তবে রোজার নিয়ত করতে হবে রাতে; কেননা আরবি নিয়মে দিন শুরু হয় রাত দিয়ে। মাগরিবের পর থেকে নতুন দিন শুরু হয়। হোক সেটা রমজানের রোজা, শাওয়াল মাসের রোজা বা নফল রোজা। প্রত্যেক রোজার নিয়তই রাতে করতে হবে। আমরা ঘুমানোর পূর্বে শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত করে ঘুমাবো। কোন কারণে যদি সাহরির জন্য উঠতে না পারি, আমাদের রোজা হয়ে যাবে। তবে, সাহরি করা সুন্নাত, সাহরিতে রয়েছে বারাকা। তাই আমরা রোজা রাখার পূর্বে সাহরি করবো। 

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতে হবে  না। শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত হিসেবে নিচের নিয়মটি অনেকেই পড়ে থাকেন।  এটি সঠিক শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত নয়। স্বাভাবিকভাবে আমরা  ফরজ নামাজ গুলোর ক্ষেত্রে যেভাবে নিয়ত করে থাকি শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত একই রকম করতে হবে।  অর্থাৎ শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত হবে মনে মনে। শুধু শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত নয় সকল , সুন্নাত বা নফল ইবাদতের ক্ষেত্রেও মুখে নিয়ত করার  বৈধতা পাওয়া যায় না।  কোন কিছু করার চিন্তা মাথায় আসার পর সে ঠিক করার জন্য মনে মনে সংকল্প করায় নিয়তের জন্য যথেষ্ট।  অর্থাৎ আপনি যখন শাওয়াল মাসের রোজা রাখতে চাইবেন, তখন মনে মনে সংকল্প করবেন “আমি আজ শাওয়াল মাসের রোজা রাখবো”  এই কথাটি নিজের মতো করে মনে মনে সংকল্প করলেই বা ইচ্ছা করলেই নিয়ত হয়ে যাবে। তবে রোজার নিয়ত করতে হবে রাতে; কেননা আরবি নিয়মে দিন শুরু হয় রাত দিয়ে। মাগরিবের পর থেকে নতুন দিন শুরু হয়। এভাবে নিয়ত করলে আপনার নিয়ত হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। 

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত

শাওয়াল শব্দের অর্থ  উঁচু করা, উন্নত করণ, পূর্ণতা, উন্নত ভূমি, পাল্লা ভারী হওয়া, ফলবতি, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়্‌ হস্ত প্রসারিত করা, প্রার্থনায় হস্ত উত্তোলন করা, অবশেষে সামান্য পানি ও ফুরফুরে ভারমুক্ত অথবা সিজন করা শুকনা কাঠ। উক্ত শব্দগুলো হচ্ছে শাওয়াল শব্দের অর্থ। শাওয়াল মাসের আমল দিয়ে উন্নতি লাভ হয়, পূর্ণতা ফল লাভ হয়ে থাকে,  নেকির পাল্লা ভারী করা হয়, গৌরব অর্জন হয়ে থাকে ও সাফল্য আসে ধরা দেয়, রামাদানের পূর্ণ মাস রোজা রাখার পর আরও কয়েকটি রোজা রাখে, প্রাপ্তির আনন্দে বিভোর হয়ে যায়, ফজর রোজা পালন করার পর নফল রোজা রাখার জন্য মনোনিবেশ করে। (শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত) এছাড়াও আরও অনেক যথার্থতা পাওয়া যায় শাওয়াল মাসের। 

মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন, “ যখন তুমি ফরজ দায়িত্ব সম্পূর্ণ করবে তখন উঠে দাঁড়াবে এবং তুমি নফলের মাধ্যমে তোমার রবের প্রতি অনুরাগ হবে।” (সূরা-৯৪ ইনশিরা: আয়াত: ৭-৮)

ইসলামী মাছ গুলোর মধ্যে শাওয়াল মাস বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। শাওয়াল মাসের বহুবিধ তাৎপর্য আছে।  আরবি চান্দ্রবর্ষের দশম মাস হচ্ছে শাওয়াল মাস।  এটা হজের তিন মাসের (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) অগ্রণী। শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ পালন করা হয়। পহেলা শাওয়াল সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় করা এবং ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব আমাদের জন্য। এর  সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে হজের, এর সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে ঈদের।  এর সাথে সম্পর্ক পাওয়া যায় রোজাও রমজানের এবং এর সাথে যোগ রয়েছে সদাকা ও যাকাতের (শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত)। এই মাসের 7 তারিখে দ্বিতীয় হিজরী সনে ( 23 মার্চ 625 খ্রিস্টাব্দে) উহুদ যুদ্ধে বিজয় হয়েছিল।  এই মাসের আমল ও ইবাদতের জন্য অত্যন্ত উপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। 

শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার সুন্নত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছর রোজা পালন করল।” (মুসলিম: ১১৬৪; আবুদাউদ: ২৪৩৩; তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, সহিহ্-আলবানি)। চন্দ্র মাস অনুযায়ী 354 বা 350 দিনে এক বছর পরিপূর্ণ হয়। প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কমপক্ষে 10 গুন করে বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন। (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৬০)। এই হিসাব অনুযায়ী রমজান মাসের এক মাসের (৩০ দিনের) রোজা দশগুণ হয়ে ৩০০ দিনের সমান হয়। বাকি 54 বা 55 দিনের জন্য আরও ছয়টি রোজা রাখা প্রয়োজন হয়। 

 রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, আল্লাহ তাআলা শাওয়াল মাসের ছয় দিনে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবে; আল্লাহ সৃষ্টি সৃষ্টিজীবের সংখ্যার সমান নেকী দিবে, সম পরিমান গুনাহ মুছে দিবেন এবং পরকালে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।  শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম হচ্ছে তাহলে যেকোনো সময় এই রোজা রাখা যায়। এককথায় ধারাবাহিকভাবে বা মাঝেমধ্যে বিরোধী দিয়েও শাওয়ালের ছয় রোজা আদায় করা যাবে।  উল্লেখ্য যে,  রমজান মাসে ফরজ রোজা ব্যতীত অন্যান্য রোজার নিয়ত সাহরির সময়ের মধ্যেই করতে হবে।  ঘুমানোর পূর্বে বা তারও আগে যদি কেউ শাওয়ালের ছয় রোজার নিয়ত করে বা দৃঢ় সংকল্প থাকে তাহলে নতুন নিয়ত না হলেও চলবে এবং না খেতে পারলে রোজা হবে। (ফাতাওয়া শামি)

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে সহিহ হাদিস:

শাওয়াল মাস হচ্ছে হজ্জের মাস গুলোর মধ্যে প্রথম মাস। এ মাস থেকে হজ্জের কার্যক্রম শুরু হয়ে থাকে। এছাড়া সহিহ হাদিস দ্বারা শাওয়াল মাসের একটি ফজিলত প্রমাণিত আছে। 

** রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে। এরপর সে শাওয়াল মাসের ৬টি সিয়াম পালন করবে, তার সারা বছর সিয়াম পালন হবে।”  

** কোন কোন জয়ীফ হাদিস পুরো শাওয়াল মাস জুড়েই সিয়াম পালন করার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।  একটি জয়ীফ হাদীসে উল্লেখ আছে, “যে ব্যক্তি রমজান এবং শাওয়াল মাস এবং (সপ্তাহে) বুধবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। 

এ ছাড়া শাওয়াল মাসের আর তেমন কোনো ফজিলতের কথা প্রমাণিত হয় নি। মুমিন ব্যক্তি শাওয়াল মাসে তার তাহাজ্জুদ, চাশত, যিক্র ওযীফা ইত্যাদি সাধারণ ইবাদত নিয়মিত ভাবে পালন করতে থাকবেন। সাপ্তাহিক ও মাসিক নফল সিয়াম নিয়মিত পালন করতে থাকবেন। অতিরিক্ত এই ৬টি সিয়াম বা রোজা রাখবেন। এছাড়াও শাওয়াল মাসের জন্য বিশেষ সালাত, সিয়াম, যিক্র, দোয়া, দান বা অন্য কোনো নেক আমল, কিংবা শাওয়াল মাসে কোনো নেক আমল করার ফলে বিশেষ সাওয়াব পাওয়া যাবে এই বিষয়ে যা কিছু প্রচলিত বা কথিত সবই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। এগুলোর অনেক কথা সাধারণভাবে শাওয়াল মাসের ফজিলত ও ৬ রোযার বিষয়ে বানানো হয়েছে। আর কিছু কথা শাওয়াল মাসের প্রথম দিন বা ঈদুল ফিতরের দিনের বিশেষ নামায বা আমলের বিষয়ে বানানো হয়েছে।

আজ আমরা আলোচনা করেছি শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত সম্পর্কে। পাশাপাশি আমরা আরও জেনেছি শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত ও শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস সম্পর্কে। পোস্টটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। 

One comment

  1. এই কলাম পড়ে বুঝলাম যে,শহীদুল ইসলামের মতো লোকেরা পরীক্ষায় ২ মার্কস পাওয়ার আশায় দিস্তায় দিস্তায় সরকারী কাগজ নষ্ট করে আর অপ্রাসঙ্গিক বিষয় বার বার লিখে পরীক্ষার
    খাতা ভারী করে!😠😠😠

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *