বন্ধুরা আজ আমরা আলোচনা করব। ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এবং তার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে। আপনি যদি ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত। ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
প্রিয় বন্ধুরা ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা অনেকেই অনেক ভাবে গুগল অথবা ইউটিউব এ সার্চ করে থাকেন। আপনারা সকলেই জানেন বাংলাদেশের এক একটি জেলা বিভিন্ন কারণে বিখ্যাত। তেমনি প্রতিটি জেলার মতো ফরিদপুর জেলাও কিছু কিছু জিনিসের জন্য বিখ্যাত। তো আপনাদের জন্য ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
আজকে এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সামনে উল্লেখ করবো ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এবং বিখ্যাত স্থান, ফরিদপুর কোন নদীর তীরে অবস্থিত, ফরিদপুর এর পুরাতন নাম কি, ফরিদপুরের বিখ্যাত খাবার, ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত স্থান, ফরিদপুরের বিখ্যাত মিষ্টি, ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ, ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি ।আশা করছি আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এবং সে সম্পর্কে বিস্তারিত
এখন আমরা ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে একটা পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেয়াড় চেষ্টা করব। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত
ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর মূল কারণ হল ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুড় এবং খেজুরের রস। খেজুরের গুড় বাংলাদেশের একুট জনপ্রিয় খাবার। মূলত শীত কালীন সময়ে গুড়ের চাহিদা বাংলাদেশে অনেকাংশে বেড়ে যায়। ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুড় খুবই বিখ্যাত এবং সুস্বাদু হওয়ার কারনে ফরিদপুর জেলাকে খেজুরের গুড়ের কারনে বিখ্যাত বলা হয়।
ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ফরিদপুর জেলাটি বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত একটি জেলা। আয়তনের দিক থেকে এই জেলাটি প্রায় ২০৭১.৭২ বর্গ কি.মি। এই জেলাটির পশ্চিমে অবস্থিত মাগুরা এবং নড়াইল জেলা, পূর্বে অবস্থিত ঢাকা এবং মাদারিপুর জেলা, উত্তরে অবস্থিত রাজবাড়ী এবং মানিকগঞ্জ জেলা এবং সবশেষে দক্ষিণে অবস্থিত গোপালগঞ্জ জেলা। ফরিদপুর জেলাটি ৯টি উপজেলা এবং ৯টি থানা নিয়ে গঠিত।
ফরিদপুর জেলার কিছু দর্শনীয় স্থান
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুরের কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে। ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে-
-
পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি
-
সাতৈর মসজিদ
-
মধুমতি নদী
-
মথুরাপুর দেউল
-
কানাইপুর জমিদার বাড়ি
-
ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক
-
পাতরাইল মসজিদ
-
গেরদা ফলক
-
নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট
-
আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল
-
ফরিদপুর কোন নদীর তীরে অবস্থিত
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুর কোন নদীর তীরে অবস্থিত। ফরিদপুর কুমার নদীর তীরে অবস্থিত।
কুমার নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার একটি নদ। এই নদীটির দৈর্ঘ্য ৭৯ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৪৪ মিটার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক কুমার নদীর প্রদ্ত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ১১
ফরিদপুর এর পুরাতন নাম কি
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুর এর পুরাতন নাম কি সে সম্পর্কে। ফরিদপুরের নামকরণ করা হয়েছে এখানকার প্রখ্যাত সুফি সাধক শাহ শেখ ফরিদুদ্দিনের নামাণুসারে। ফরিদপুরের পুরাতন নাম ছিল ফতেহাবাদ।
ফরিদপুর জেলা পরিচিতি ও নামকরণের ইতিহাস ১৭৮৬ সাল মতান্তরে ১৮১৫ সালে ফরিদপুরের নামকরণ করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলার পূর্ব নাম ফতেহাবাদ। ১৭৮৬ সালে ফরিদপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এটার নাম ছিল জালালপুর। প্রশাসনিক অফিস ছিল ঢাকায়। ১৮০৭ সালে ঢাকা থেকে জালালপুর কে বিভক্ত করা হয় এবং ফরিদপুর নামকরণ করা হয়। ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর এবং শরিয়তপুর এই পাঁচটি জেলায় রুপান্তর করা হয়।
ফরিদপুরের বিখ্যাত খাবার
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুরের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে। ফরিদপুরের বিখ্যাত খাবার হল- খেজুরের গুড়, মিষ্টি পিঠা এবং পদ্মার ইলিশ।
ফরিদপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হল খেজুর রসের গুড়। খেজুরের গুড় ফরিদপুর থেকে সারা বাংলাদেশে দেওয়া হয়। ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুড় অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত। ফরিদপুর জেলাই প্রচুর পরিমাণে খেজুর গাছ থাকাই এখানকার বাসিন্দারা শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে ভেজাল মুক্ত খেজুরের গুড় তৈরি করে এবং এই গুড়ে অনেক সুঘ্রাণ হয়ে থাকে।
ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত স্থান
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে। ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত স্থান হল- সাতৈর মসজিদ, মধুমতি নদী, মথুরাপুর দেউল, কানাইপুর জমিদার বাড়ি, ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক, পাতরাইল মসজিদ, গেরদা ফলক, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ইত্যাদি।
ফরিদপুরের বিখ্যাত মিষ্টি
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুরের বিখ্যাত মিষ্টি সম্পর্কে। ফরিদপুরের বিখ্যাত মিষ্টি হল খোকা মিয়ার মিষ্টি। ফরিদপুর শহরের কমলাপুরে অবস্থিত এই মিষ্টির দোকান। এটির নাম খোকা মিয়ার মিষ্টি হলেও স্থানীয়রা একে তেঁতুলতলার মিষ্টি বলেই জানে। দোকানটি মূলত, তেঁতুলতলা মোড়ে হওয়াতে এমন নাম দোকানটির।
ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
এখন আমরা আলোচনা করব ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গদের সম্পর্কে। ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ পল্লি কবি জসীমউদ্দীন, হাজী শরীয়তুল্লাহ, আম্বিকাচরণ মজুমদার, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ।
পল্লি কবি জসীমউদ্দীন
ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এর পরিচিত একটি নাম হল পল্লি কবি জসীমউদ্দীন। পল্লি কবি জসীমশউদ্দীন ১৯০৪ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাটিকুলেশন পাশ করেন, এরপর ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইয়ে এবং বি এ, কলকাতা থেকে ১৯৩১ সালে এম.এ পাশ করেন। তিনি সর্বমোট ৪৫টি গ্রন্থ রচনা করেন। কবি জসিমউদ্দীন আমাদের ফরিদপুরের জন্য গর্ব। এই মহান কবি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
হাজী শরীয়তুল্লাহ
হাজী শরীয়তুল্লাহ ছিলেন বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ এবং সংস্কারক। তিনি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন মাদারীপুর মহকুমার শ্যামাইল গ্রামে ১৭৮১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গদেশে পরায়েজী আন্দোলন এর প্রবর্তক ছিলেন। হাজী শরীয়তুল্লাহ ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র পীর দুদু মিয়া ফরায়েজী আন্দোলন এর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
আম্বিকাচরণ মজুমদার
আম্বিকাচরণ মজুমদার ১৮৫১ সালের ৬ জানুয়ারি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৫৭ সালে জেনারেল এসেম্বলিজ ইনস্টিটিউট থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ পাশ করেন। এরপর বি এল পাশ করে ফরিদপুর বারে আইন ব্যবসায় যোগদান করেন। আম্বিকাচরণ মজুমদার হচ্ছেন রাজেন্দ্র কলেজের প্রতিষ্ঠিতা এবং তিনি কংগ্রেসের ৩১ তম সভাপতি ছিলেন। আম্বিকাচরণ মজুমদার ১৯২২ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ এর জন্ম ১৯৪৩ সালের মে মাসে, ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার কামারখালী ইউনিয়নের ছালামতপুর গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মুন্সী মেহেদি হাসান। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ ১৯৬৩ সালে ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলসে সৈনিক পদে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২০ শে এপ্রিল তিনি সম্মুখে যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করেছে।
ফরিদপুর জেলা কেন বিখ্যাত
ফরিদপুর জেলা কেন বিখ্যাত এর মূল কারণ হল ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুড় এবং খেজুরের রস। খেজুরের গুড় বাংলাদেশের একুট জনপ্রিয় খাবার। মূলত শীত কালীন সময়ে গুড়ের চাহিদা বাংলাদেশে অনেকাংশে বেড়ে যায়। ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুড় খুবই বিখ্যাত এবং সুস্বাদু হওয়ার কারণে ফরিদপুর জেলাকে খেজুরের গুড়ের কারণে বিখ্যাত বলা হয়।
পরিশেষে
অবশেষে আমার কিছু কথা। আজকে আমি আপনাদের সাথে ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে ফরিদপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হইছেন।